09 Dec 2013
রাজধানী শহর ঢাকার উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান ১৯৯৫-২০১৫-এর শেষ স্তর ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) প্রণয়ন ও অনুমোদনের পর আশা করা গিয়েছিল যে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সংরক্ষণ এলাকাগুলো ভূমিদস্যুদের লোলুপ দৃষ্টি থেকে রেহাই পাবে এবং উন্নয়ন কার্যক্রম পরিকল্পনা নির্দেশিত পথেই পরিচালিত হবে। এখানে উল্লেখ্য যে, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন ৫৯০ বর্গমাইলের পুরোটাই শহর হয়ে যাবে না। এখানে থাকতে হবে বার্ষিক বন্যাপ্রবণ এলাকা, যেখানে এমন কোনো উন্নয়ন করা যাবে না, যা বন্যার পানিপ্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করে, এখানে থাকতে হবে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ এলাকা যা বৃষ্টির পানি ধারণ করবে যাতে নিষ্কাশনের আগে শহরে জলাবদ্ধতা না হয়, খাদ্য নিরাপত্তার জন্য থাকতে হবে কৃষিজমি এবং শহরের প্রাত্যহিক ব্যবহৃত পানিনিষ্কাশনের জন্য প্রাকৃতিক খাল ও নিচু জায়গাগুলো থাকবে সকল প্রকার ভরাটমুক্ত। ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যানে মৌজা ম্যাপে দাগ নম্বর উল্লেখ করে বিভিন্ন ভূমি ব্যবহার এলাকা নির্দিষ্ট করে দেখানো হয়েছে। ভূমি ব্যবহার জোন অনুযায়ী রাজউক নিয়ন্ত্রণাধীন প্রায় তিন লাখ পঞ্চান্ন হাজার একর এলাকার প্রায় ৮১ হাজার একর কৃষিজমি, প্রায় পঁচাত্তর হাজার একর বন্যাপ্রবাহ অঞ্চল আর প্রায় পাঁচ হাজার ৫০০ একর জলাধার হিসেবে চিহ্নিত। এগুলো সংরক্ষিত এলাকা, যার ব্যবহার পরিবর্তন বিপর্যয় ডেকে আনবে। এ ছাড়া এগুলোর ব্যবহার পরিবর্তনের কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ অন্যান্য ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত জমি নির্দিষ্ট করা আছে। যেমন নগর আবাসিক এলাকার জন্য প্রায় ৬৬ হাজার একর নির্দিষ্ট করা আছে। ড্যাপ অবলম্বনে একরপ্রতি জনঘনত্ব ২৫০ জন ধরা হয়, তা হলে এই পরিমাণ জায়গায় এক কোটি ৬৫ লাখ জনের স্থান সংকুলান হয়। এটাই কিন্তু শেষ নয়। গ্রামীণ বসতি হিসেবে নির্দিষ্ট আছে প্রায় ৩৬ হাজার একর জমি। এই পরিমাণ জায়গায় একরপ্রতি ৯০ জন হিসেবে প্রায় ৩২ লাখ লোকের স্থানসংকুলান হতে পারে। পূর্বাচল ও ঝিলমিলকে ওভার লে হিসেবে দেখানো হয়েছে। আরো আছে উত্তরা তৃতীয় পর্যায় ও উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্পের জমি। এসব মিলিয়ে আরো প্রায় নয় হাজার একর যেখানে স্থান সংকুলান হবে, আরো ২২ লাখ ৫০ জনের। দেখা যাচ্ছে, সব মিলিয়ে আবাসনের জন্য বরাদ্দকৃত এলাকায় দুই কোটি ১৯ লাখ লোকের স্থানসংকুলান হতে পারে। তবে বেসরকারি ভূমি উন্নয়ন নীতিমালায় একরপ্রতি জনঘনত্ব ৩৫০ জন ধরা হয়েছে। এই হিসাবে আরো অনেক বেশি লোকের সংস্থান হতে পারে। ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যানের প্রাক্কলন অনুযায়ী, ২০১৫ শেষে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকার জনসংখ্যা হবে প্রায় এক কোটি ৮৪ লাখ। ধারণা করা হয়, বর্তমানে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সীমানার ভেতর এক কোটি ৫০ বা ৬০ লাখ লোকের বাস, যা ২০১৫ নাগাদ এক কোটি ৭০ লাখ ছুঁতে পারে। তাহলে স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছে যে ২০১৫ সাল নাগাদ উন্নয়নের জন্য বাড়তি জমির প্রয়োজন নেই।
জলাধার হিসেবে চিহ্নিত এলাকাগুলো সংরক্ষণ করা অতীব জরুরি। বিশেষ করে ইস্টার্ন ফ্রিঞ্জের জলাধার হিসেবে নির্ধারিত এলাকাগুলো বালু নদীর পশ্চিম তীর থেকে প্রগতি সরণি পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকা জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত রাখার চাবি-কাঠি। আমাদের দেশের বৃষ্টিপাতের ধরন এমন যে এখানে অল্প সময়ের প্রবল বৃষ্টিতেই অনেক পানি জমে যায়। বিদ্যমান ড্রেনেজ ব্যবস্থা এই পরিমাণ পানি তাৎক্ষণিকভাবে নিষ্কাশন করতে পারে না। এই পানিনিষ্কাশনের জন্য বাড়তি সময়ের প্রয়োজন হয়। সে কারণে পানি জমা হওয়ার জন্য হিসাব অনুযায়ী জায়গা সংরক্ষণ করতে হয়। ইস্টার্র্ন ফ্রিঞ্জ ডিএমডিপি অনুযায়ী ঢাকার অন্যতম প্রধান নিউ আরবান এরিয়া। এই এলাকার পানিনিষ্কাশনের জন্য ১২.৫ শতাংশ জায়গা জলাধার হিসেবে চিহ্নিত করে মৌজা ম্যাপে দাগ নম্বর অনুযায়ী সংরক্ষণের জন্য ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যানে চিহ্নিত করা হয়েছে। ইস্টার্র্ন ফ্রিঞ্জে জলাবদ্ধতা ডিএনডির মনো প্রকট হতে বেশি সময় লাগবে না যদি না জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গাটুকু সংরক্ষণ করা হয়। দুর্ভাগ্যের বিষয়, এই জায়গাটুকু এখন ব্যাপক ভরাট প্রক্রিয়াধীন। ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান অনুমোদন এবং গেজেট প্রকাশের পর জলাধার হিসেবে চিহ্নিত এলাকাগুলো টাউন ইমপ্রুভমেন্ট অ্যাক্ট-১৯৫৩ এবং মহানগর, বিভাগীয় শহর, জেলা শহরের পৌর এলাকাসহ দেশের সকল পৌর এলাকার খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান, উদ্যান এবং প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন ২০০০ অনুযায়ী সম্পূর্ণ বেআইনি। কিন্তু এই অপকর্মটি জারি রয়েছে। পরিকল্পনাবিদ খ ম আনসার হোসেন ও পরিকল্পনাবিদ সাইফুল ইসলাম তাদের সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখিয়েছেন যে, ইস্টার্ন ফ্রিঞ্জের জলাধারের প্রায় ৭৭ শতাংশ ইতোমধ্যে ভরাট করা হয়েছে যার প্রায় চল্লিশ শতাংশ ভরাট করা হয়েছে ২০১০ সালের জুনে ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান অনুমোদন ও গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর। দেশের অন্যতম বৃহৎ ভূমি উন্নয়নকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা এই কাজে সম্পৃক্ত। বসুন্ধরা অবশ্য কেরানীগঞ্জের বন্যাপ্রবাহ জোনের বিরাট এলাকাজুড়ে তাদের রিভার ভিউ প্রকল্পের মাধ্যমে একই অপকর্ম করেছেন। ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যানে কেরানীগঞ্জের এই এলাকা বন্যাপ্রবাহ জোন। ফলে এখানে আবাসন অনুমোদনের কোনো সুযোগ নেই।
ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান অনুমোদনের পর তা বাস্তবায়নের জন্য কী কী করতে হবে, সে বিষয়ে ড্যাপ রিপোর্টেই বিস্তারিত বলা হয়েছে। ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যানে মূলত মৌজা ম্যাপে প্লট ভিত্তিতে বিভিন্ন ভূমি ব্যবহার জোনগুলো স্ট্রাকচার প্ল্যানের আলোকে নির্দিষ্ট করা হয়েছে। সমস্ত ভূমি ২১টি জোনে ভাগ করে কোন জোনে কি করা যাবে এবং কি করা যাবে না তা স্পষ্টভাবে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। যেহেতু মৌজা ম্যাপে চিহ্নিত হয়েছে এবং জিআইএস প্রযুক্তিতে ডাটা সংরক্ষিত হয়েছে, উন্নয়ন কার্যক্রম প্রণীত পরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা খুবই সহজ। শুধু দরকার সদিচ্ছা। ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান বাস্তবায়নের জন্য কী কী করতে হবে সে বিষয়ে অনুসরণীয় কার্যাদি হিসেবে কিছু দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মূল কাজটি হলো ননকমফরমিং ব্যবহারগুলোর তালিকা প্রস্তুত করে সেগুলোর ব্যবহার ওই জোনের অনুমোদিত কার্যাদির সঙ্গে সাজুয্যপূর্ণ করার কার্যক্রম গ্রহণ। প্রস্তাবিত বিভিন্ন উত্তর-দক্ষিণ ও পূর্ব-পশ্চিম সংযোগ সড়কগুলোর জন্য রাইট অব ওয়ে সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ আরেকটি জরুরি কাজ। প্রস্তাবিত এই সংযোগ সড়কগুলো শহরের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগব্যবস্থা কার্যকর করার মাধ্যম। এই রাইট অব ওয়ে সংরক্ষণ করার জন্য জমি অধিগ্রহণ করার সামর্থ্য আমাদের নেই। অন্যদিকে সামর্থ্য থাকলেও বিপুলসংখ্যক লোক এতে বাস্তুচ্যুত হতে পারে যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। অথচ রাজধানী শহরকে বেগবান রাখতে এই সড়কগুলো লাগবেই। প্রস্তাবিত এই সড়কগুলোর জন্য জমি সংগ্রহের জন্য প্রতিটি এলাকার ভূমি মালিকদের সম্পৃক্ত করে ল্যান্ড রি এডজাস্টমেন্ট অথবা গাইডেড ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট টেকনিক ব্যবহার করতে হবে। প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যের অনেক দেশই এই কৌশল ব্যবহার করছে। আমাদের বাড়ির কাছের নেপালেও এই কার্যক্রমের মাধ্যমে শহরের পরিকল্পিত বিকাশের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাজউককে এই কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু রাজউক এই পথেই হাঁটছে না।
ঢাকা শহরে ভূমি উন্নয়নকাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানসমূহ ইতোমধ্যে বন্যাপ্রবাহ, কৃষিজমি ও সংরক্ষিত জলাধার এলাকায় ভরাট কার্যক্রম চালিয়ে সে জমির আদল পরিবর্তন করে ফেলেছে। ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান অনুমোদিত হওয়ায় এবং মৌজা ম্যাপের দাগ নম্বর নির্দিষ্ট করে জোনিং করার ফলে এগুলো এখন ননকনফরমিং ইউজ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তাই এই ভূমি উন্নয়ন কোম্পানিগুলো ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান বাস্তবায়নে বাধা দিচ্ছে এবং ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যানের বিরুদ্ধে নানাবিধ অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। এই দলটি এতটাই শক্তিশালী যে সরকার ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান রিভিউ করার জন্য স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রীকে আহ্বায়ক করে আটটি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে একটি অতি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রিভিউ কমিটি গঠন করেছে। এই রিভিউ কমিটি ইতোমধ্যে দুটি সভা করেছে এবং অতি সম্প্রতি তৃতীয় সভাটি কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী উপস্থিত না থাকায় স্থগিত করা হয়েছে। তবে আগের সভা দুটিতে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে তা জানা যায়নি। অন্যদিকে ২০১৫ সালে ডিএমডিপির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। বিধায় পরবর্তী ২০১৬-২০৩৫ সময়ের ২০ বছর মেয়াদি স্ট্রাকচার প্ল্যান প্রস্তুত করার জন্য সিটি রিজিয়ন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের অধীনে কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ২০১৬-২০৩৫ সময়ের জন্য ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান প্রণয়নের উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়েছে। এই দুটি প্রকল্পের ব্যাপারে কিছু তাত্ত্বিক বিভ্রান্তি রয়েছে, যা অন্য কোনো সময় আলোচনা করা যেতে পারে।
ঢাকা শহরে ব্যক্তি উদ্যোগ, বেসরকারি ভূমি উন্নয়ন সংস্থা, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, সামরিক বাহিনী সহ অনেকেই ভূমি উন্নয়ন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত। এই উদ্যোক্তাদের অনেকেই ডিএমডিপি তথা ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান অনুসরণ করে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করছেন না। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকেই প্রথমে নিজ পরিকল্পনা ভঙ্গকারী হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। তাদের পূর্বাচল ও ঝিলমিল প্রকল্পদ্বয় ডিএমডিপি অনুসরণ করে গ্রহণ করা হয়নি। পূর্বাচল প্রকল্পের দরুন ভূমি উন্নয়ন কার্যক্রম বন্যাপ্রবাহ এবং কৃষিজমি হিসেবে জোনিংকৃত এলাকায় ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হয়েছে। জমিতে বিনিয়োগ অধিক লাভজনক এবং অন্য কোনো সেক্টরে বিনিয়োগের সীমিত সুযোগের কারণে জনসাধারণ জমিতে বিনিয়োগ করতেই অধিক উৎসাহী। আর এই জন্য বিশেষ করে বেসরকারি ভূমি উন্নয়ন সংস্থাগুলো নির্বিচারে কৃষিজমি ভরাট করে হাউজিং প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন। এই হাউজিংয়ের সীমানা এখন রাজউক নিয়ন্ত্রিত এলাকার পরিধির বাইরে সম্প্রসারিত হয়েছে। বিশেষ করে পূর্বাচলের পূর্বদিকে শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্বদিকে হাউজিং কার্যক্রম সম্প্রসারণের কারণে বন্যামুক্ত সেচ সুবিধাসম্পন্ন তিনফসলি কৃষিজমি আবাসনের থাবায় ধ্বংসের সম্মুখীন। অথচ এত জমি আবাসনের জন্য প্রয়োজন আছে কিনা এবং সারা দেশের সব নাগরিকই ঢাকাবাসী হয়ে যাবে কিনা সে বিষয়ে গভীরভাবে ভাবার সময় পেরিয়ে যাচ্ছে।
সাম্প্রতিক একটি সংবাদে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের জনসংখ্যা ২০ কোটিতে পৌঁছে স্থিতিশীল হতে পারে। এখন প্রশ্ন হলো, রাজধানী ঢাকার জনসংখ্যা কত হওয়া উচিত বা দেশের জনসংখ্যার কত শতাংশ রাজধানী শহরে বসবাস করবে। এই বিষয়টির মীমাংসা অতীব জরুরি। কারণ সাধারণত রাজধানী শহরের জন্য জাতীয় সম্পদের disproportionate অংশ বরাদ্দ নিয়ে নেওয়া হয়, যা বিশাল জনগোষ্ঠীকে রাজধানী শহরে অভিবাসন করতে উদ্বুদ্ধ করে। পরিণতিতে রাজধানীতে ঘটে জনবিস্ফোরণ, দুঃসহ যানজট সৃষ্টি হয়, জমির দাম আকাশছোঁয়া উচ্চতায় উঠে যায়, শহরের পরিধি এতটাই বিস্তৃত হয় যে সর্বক্ষেত্রে চূড়ান্ত অব্যবস্থা অনিবার্য হয়ে যায়, প্রয়োজনীয় নাগরিক সুবিধা প্রদান অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়, তাই জনজীবন হয়ে যায় নিত্য যাতনাময়।
এই অবস্থার জন্য মূলত দায়ী জাতীয় পর্যায়ে পরিকল্পনাহীনতা। আমরা এখনো ঠিক করতে পারিনি জাতীয় অর্থনীতিতে রাজধানী শহর ও অন্যান্য শহর কী ভূমিকা পালন করবে। ঢাকা জাতীয় অর্থনীতিতে অনেক বড় অবদান রাখছে এবং সারা দেশের জিডিপির ৩০ শতাংশ ঢাকার অবদান। এই যদি আমাদের সন্তুষ্টির কারণ হয় তাহলে বলার কিছু নেই। সে ক্ষেত্রে বিশ্বের বাসযোগ্য নগর তালিকার দ্বিতীয় সর্বনিম্ন মানের শহরের গর্বিত অংশীদারের কালিমা কখনোই মোছার নয়।
_______________________________
লেখক : নগর পরিকল্পনাবিদ ও গ্রন্থাগার সংগঠক